এক টিকিটেই অনেকগুলো সিনেমা দেখে ফেলার সুযোগ রয়েছে 'চতুষ্কোণ' সিনেমায়। অনেকগুলো বলতে মোটে চারটে। এর আগে এক সিনেমায় দশটা ছবি দেখার অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তারা বলবে এ আর এমন কি। ঠিক কথা। তবে সেখানে দশটা সম্পূর্ণ আলাদা। কোনো যোগসূত্র নেই। ইদানিং সন্দীপ রায়ের 'চার'-ও সেই একই রকম। কোনো যোগসূত্র নেই। প্রসঙ্গত বলে রাখি দারুণ দারুণ কিছু গল্প সম্বলিত 'চার' একটি অতি অখাদ্য বোরিং বাজে মেকিং-এর সিনেমা। কিছু বছর আগে সুমন মুখোপাধ্যায় তার 'মহানগর@কলকাতা' সিনেমায় আলাদা আলাদা তিনটে গল্পকে শেষ মেশ অতি নিপুণ দক্ষতায় এক যোগসূত্রে এনে বেধেঁ ছিলেন। যদিও এখনো আমি সুমনের 'মহানগর@কলকাতা'কেই বেশী এগিয়ে রাখবো শ্রীজিতের 'চতুষ্কোণ'-এর থেকে। সেই ছবিতে অঞ্জন দত্ত, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, একটি ছোটো জায়গায় কবীর সুমন ফাটিয়ে অ্যাক্টিং করেছিলেন। যাই হোক এখানে এসব আলোচনা করছি কেন? এটা তো 'চতুষ্কোণ' নিয়ে আলোচনা।
যেটা বলছিলাম, এক টিকিটে অনেকগুলো সিনেমা দেখে ফেলার মজার সাথে সাথে এক টিকিটে অনেকগুলো সিনেমা মনে করিয়ে দেওয়ার মত ঘটনাও এখানে ঘটেছে। শ্রীজিত অনুগামী এবং তার চাটুকাররা হয়ত আমার উপর রেগে যাবে কিন্তু আমি কি করব বলুন যদি এই সিনেমাটা দেখে আমার যথাক্রমে 'ডরনা মানা হে' , 'দ্য সিক্সথ সেন্স' , টেবিল নম্বর ২১' ইত্যাদি সিনেমার কথা মনে পড়ে যায়?? যারা 'ডরনা মানা হে' দেখেছেন তারা নিশ্চয় মনে করতে পারবেন সেখানে একটি গল্প ছিল যেখানে 'সঈফ-আলি-খান এবং বোমেন ইরানী' অভিনয় করেছিলেন। 'চতুষ্কোণ' সিনেমার কোনো যায়গায় যদি কারেন্টের মত আমার সেই সিনেমার ঝিলিক মেরে যায় তবে আমার কি দোষ?
আপনারা ভাবছেন, আমার বোধহয় 'চতুষ্কোণ' ভালো লাগে নি। আপনারা মূর্খ। ভালো না লাগলে কি আমি প্রায় ৩০ মিনিট সময় নষ্ট করে এটি লিখতাম। বরং শ্রীজিতের কাছে অন্তত আমি এরকম সিনেমাই আশা করি। মাঝখানে কি প্যানপ্যানানি মার্কা 'মিশর রহস্য' বা 'জাতিস্মর' ইত্যাদি বানান শুরু করেছিলো। ধূর ধূর!! এটাই তো শ্রীজিতের আসল ঘরানা। শ্রীজিতের সিনেমা দেখে বেরিয়ে আমি ভাবতে শিখব - পৃথিবীর সব আত্মহত্যার জন্য কেউ না কেউ দায়ী। যারা 'কেউ দায়ী নয়' চিঠি লিখে রেখে মরে যায় তারা আসলে অভিমান করে বলে 'কেউ দায়ী নয়'। অভিমান এতটাই প্রকট যে আমি তোমার জন্য মরছি সেটাও তোমায় বুঝতে দেব না। কেন তোমায় বুঝতে দেব, আমি আজ তোমার উপর অভিমান করে ভাত খাইনি। আমি এমন-ই খাই নি।আমার ক্ষিদে নেই। আসলে মৃত্যু যখন ঘটেছে তখন কেউ না কেউ তো দায়ী। গোটা সিনেমা সেই মৃত্যু এবং তার দায় নিয়েই ঘটেছে। আমরা নিবিষ্ট চিত্তে দেখেছি।
গল্প বলে দেওয়ার লোভ অনেক সমালোচকের মনে থাকে। আমার নেই। আমি ওটাকে পাপ মনে করি। তাই গল্প তো বলবই না। সিনেমাটা দেখতে যাওয়ার উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি মাত্র।
উদাহরণ ১ঃ গৌতম ঘোষ যখন তার গল্প বলতে গিয়ে নায়কের একটা খটমট নাম বলে। চিরঞ্জিত সেটা শুধরে দিয়ে বলে, ঐ নাম চলবে না।
গৌতম ।। তাহলে কি নাম দেওয়া যায়?
চিরঞ্জিত ।। ধরা যাক প্রতীক।
যারা ঠিক সেই মুহুর্তে ধরতে পারবে বাস্তব অভিনেতা চিরঞ্জিত-এর একটি অতি জনপ্রিয় সিনেমার নাম 'প্রতীক'। এখানে মজাটা তারাই খুঁজে পাবেন। এই মজাটা বাংলার বাইরের দর্শক পাবে না। কোন ভাবেই পাবে না।
উদাহরণ ২ঃ চিরঞ্জিত যে গল্পটা বলে সেখানে তার মূল চরিত্র একজন বাড়িওয়ালা। তার মৃত স্ত্রী হলেন কিরণ খের যাকে বিয়ের প্রথম রাতেই সাপে কামড় দিয়ে মেরে ফেলে। যে মেয়েটি তার নিচের ঘরে ভাড়া থাকে তার নাম জোৎস্না। এবার এই সুত্র গুলো জড়ো করে যে বা যারা চিরঞ্জিত-এর দুটি ছবি 'বাড়িওয়ালী' ও 'বেঁদের মেয়ে জোৎস্না' খুঁজে পাবেন, মজা তো তিনিই পাবেন।
প্রসঙ্গত, যখন আমি ছোটো ছিলাম। বয়স ১১ থেকে ১৫। চিরঞ্জিত-ই আমার ফেভারিট ছিল। বয়স এবং বুদ্ধি বাড়তে থাকার সাথে সাথে পছন্দ পালটে গিয়েছিল। আজ চিরিঞ্জিত কে দেখে এবং সেই সময় যে সে আমার পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে ছিল, সেটা ভেবে গর্ব হচ্ছিল।
উদাহরণ ৩ঃ পরমব্রত তার যে আইডিয়া গুলো বলে চলে সেগুলো তো সব তার নিজের পরিচালনায় করা ছবির গল্পগুলোই। উত্তেজনায় পরমব্রত বলে ফেলে 'জিও কাকা'। কেন ? এগুলো আপনি না জানলে ছোট ছট মজাগুলো মিস করবেন।
তার মানে কি আপনি ছবিটা বুঝবেন না। সেরকম মোটেই নয়। ছবি দারুণ। গল্প দারুণ। উত্তেজনা আছে। রোমাঞ্চ আছে। হাসি আছে। ভয় আছে। ভালো আপনার লাগবেই। শহর-গ্রাম-আধাগ্রাম-গন্ডগ্রাম-আরবান-জাম্বুবান মজা সবাই পাবে।
আসলে এক্সপেক্টেশানটা উনি নিজেই এত হাই করে রেখেছেন যে শ্রীজিতের সিনেমায় 'আমার বয়স আর আমার হাঁটুর বয়স একই' এই রকম হাজারবার শোনা জোকস শুনতে ভালো লাগে না। তবু যেহেতু শ্রীজিত তাই ডায়লগের অবস্থান-এর জোরে সেটা উতরে গেছে।
এককথায় আমার কিছু ভালো এবং খারাপ লাগা দিকগুলো সম্পর্কে বলি।
কণীনিকা-র চরিত্রটা বেমানান। দরকার ছিলো না। এবং চিরঞ্জিত-এর ছেলের সাথে তার হঠাৎ প্রেম প্রেম বন্ধুত্বটা না দেখালেই ভালো ছিলো। ঐ গানটাও ছবিকে কিছুটা স্লো করেছে বলে মনে হল। অর্পিতা চ্যাটার্জী ঠিক কি কারণে এই টুকু একটা চরিত্র করল আমি জানি না। এই ছবির আর্ট সেটিং এবং আলো কিন্তু সামনের বার ন্যাশানাল অ্যাওয়ার্ডটা ছিনিয়ে আনলেও আনতে পারে। দেখা যাক কি হয়।
শেষ একটা কথা দিয়েই আলোচনা শেষ করব। চতুষ্কোণ দেখে এলাম, খুব শিগগির আবার দেখব।
যেটা বলছিলাম, এক টিকিটে অনেকগুলো সিনেমা দেখে ফেলার মজার সাথে সাথে এক টিকিটে অনেকগুলো সিনেমা মনে করিয়ে দেওয়ার মত ঘটনাও এখানে ঘটেছে। শ্রীজিত অনুগামী এবং তার চাটুকাররা হয়ত আমার উপর রেগে যাবে কিন্তু আমি কি করব বলুন যদি এই সিনেমাটা দেখে আমার যথাক্রমে 'ডরনা মানা হে' , 'দ্য সিক্সথ সেন্স' , টেবিল নম্বর ২১' ইত্যাদি সিনেমার কথা মনে পড়ে যায়?? যারা 'ডরনা মানা হে' দেখেছেন তারা নিশ্চয় মনে করতে পারবেন সেখানে একটি গল্প ছিল যেখানে 'সঈফ-আলি-খান এবং বোমেন ইরানী' অভিনয় করেছিলেন। 'চতুষ্কোণ' সিনেমার কোনো যায়গায় যদি কারেন্টের মত আমার সেই সিনেমার ঝিলিক মেরে যায় তবে আমার কি দোষ?
আপনারা ভাবছেন, আমার বোধহয় 'চতুষ্কোণ' ভালো লাগে নি। আপনারা মূর্খ। ভালো না লাগলে কি আমি প্রায় ৩০ মিনিট সময় নষ্ট করে এটি লিখতাম। বরং শ্রীজিতের কাছে অন্তত আমি এরকম সিনেমাই আশা করি। মাঝখানে কি প্যানপ্যানানি মার্কা 'মিশর রহস্য' বা 'জাতিস্মর' ইত্যাদি বানান শুরু করেছিলো। ধূর ধূর!! এটাই তো শ্রীজিতের আসল ঘরানা। শ্রীজিতের সিনেমা দেখে বেরিয়ে আমি ভাবতে শিখব - পৃথিবীর সব আত্মহত্যার জন্য কেউ না কেউ দায়ী। যারা 'কেউ দায়ী নয়' চিঠি লিখে রেখে মরে যায় তারা আসলে অভিমান করে বলে 'কেউ দায়ী নয়'। অভিমান এতটাই প্রকট যে আমি তোমার জন্য মরছি সেটাও তোমায় বুঝতে দেব না। কেন তোমায় বুঝতে দেব, আমি আজ তোমার উপর অভিমান করে ভাত খাইনি। আমি এমন-ই খাই নি।আমার ক্ষিদে নেই। আসলে মৃত্যু যখন ঘটেছে তখন কেউ না কেউ তো দায়ী। গোটা সিনেমা সেই মৃত্যু এবং তার দায় নিয়েই ঘটেছে। আমরা নিবিষ্ট চিত্তে দেখেছি।
গল্প বলে দেওয়ার লোভ অনেক সমালোচকের মনে থাকে। আমার নেই। আমি ওটাকে পাপ মনে করি। তাই গল্প তো বলবই না। সিনেমাটা দেখতে যাওয়ার উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারি মাত্র।
উদাহরণ ১ঃ গৌতম ঘোষ যখন তার গল্প বলতে গিয়ে নায়কের একটা খটমট নাম বলে। চিরঞ্জিত সেটা শুধরে দিয়ে বলে, ঐ নাম চলবে না।
গৌতম ।। তাহলে কি নাম দেওয়া যায়?
চিরঞ্জিত ।। ধরা যাক প্রতীক।
যারা ঠিক সেই মুহুর্তে ধরতে পারবে বাস্তব অভিনেতা চিরঞ্জিত-এর একটি অতি জনপ্রিয় সিনেমার নাম 'প্রতীক'। এখানে মজাটা তারাই খুঁজে পাবেন। এই মজাটা বাংলার বাইরের দর্শক পাবে না। কোন ভাবেই পাবে না।
উদাহরণ ২ঃ চিরঞ্জিত যে গল্পটা বলে সেখানে তার মূল চরিত্র একজন বাড়িওয়ালা। তার মৃত স্ত্রী হলেন কিরণ খের যাকে বিয়ের প্রথম রাতেই সাপে কামড় দিয়ে মেরে ফেলে। যে মেয়েটি তার নিচের ঘরে ভাড়া থাকে তার নাম জোৎস্না। এবার এই সুত্র গুলো জড়ো করে যে বা যারা চিরঞ্জিত-এর দুটি ছবি 'বাড়িওয়ালী' ও 'বেঁদের মেয়ে জোৎস্না' খুঁজে পাবেন, মজা তো তিনিই পাবেন।
প্রসঙ্গত, যখন আমি ছোটো ছিলাম। বয়স ১১ থেকে ১৫। চিরঞ্জিত-ই আমার ফেভারিট ছিল। বয়স এবং বুদ্ধি বাড়তে থাকার সাথে সাথে পছন্দ পালটে গিয়েছিল। আজ চিরিঞ্জিত কে দেখে এবং সেই সময় যে সে আমার পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থানে ছিল, সেটা ভেবে গর্ব হচ্ছিল।
উদাহরণ ৩ঃ পরমব্রত তার যে আইডিয়া গুলো বলে চলে সেগুলো তো সব তার নিজের পরিচালনায় করা ছবির গল্পগুলোই। উত্তেজনায় পরমব্রত বলে ফেলে 'জিও কাকা'। কেন ? এগুলো আপনি না জানলে ছোট ছট মজাগুলো মিস করবেন।
তার মানে কি আপনি ছবিটা বুঝবেন না। সেরকম মোটেই নয়। ছবি দারুণ। গল্প দারুণ। উত্তেজনা আছে। রোমাঞ্চ আছে। হাসি আছে। ভয় আছে। ভালো আপনার লাগবেই। শহর-গ্রাম-আধাগ্রাম-গন্ডগ্রাম-আরবান-জাম্বুবান মজা সবাই পাবে।
আসলে এক্সপেক্টেশানটা উনি নিজেই এত হাই করে রেখেছেন যে শ্রীজিতের সিনেমায় 'আমার বয়স আর আমার হাঁটুর বয়স একই' এই রকম হাজারবার শোনা জোকস শুনতে ভালো লাগে না। তবু যেহেতু শ্রীজিত তাই ডায়লগের অবস্থান-এর জোরে সেটা উতরে গেছে।
এককথায় আমার কিছু ভালো এবং খারাপ লাগা দিকগুলো সম্পর্কে বলি।
কণীনিকা-র চরিত্রটা বেমানান। দরকার ছিলো না। এবং চিরঞ্জিত-এর ছেলের সাথে তার হঠাৎ প্রেম প্রেম বন্ধুত্বটা না দেখালেই ভালো ছিলো। ঐ গানটাও ছবিকে কিছুটা স্লো করেছে বলে মনে হল। অর্পিতা চ্যাটার্জী ঠিক কি কারণে এই টুকু একটা চরিত্র করল আমি জানি না। এই ছবির আর্ট সেটিং এবং আলো কিন্তু সামনের বার ন্যাশানাল অ্যাওয়ার্ডটা ছিনিয়ে আনলেও আনতে পারে। দেখা যাক কি হয়।
শেষ একটা কথা দিয়েই আলোচনা শেষ করব। চতুষ্কোণ দেখে এলাম, খুব শিগগির আবার দেখব।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন